চন্দন বারিক, দিঘাট্রিপ.কম :আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানাচ্ছে, আমফানের তীব্রতা ফণি'র তুলনায় অনেকটাই বেশী ধ্বংসাত্মক। এইসাইক্লোনকে রোখা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু এমন বিপর্যয়য়েও জীবনহানি যাতে না হয় তাই নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার…

চন্দন বারিক,
দিঘাট্রিপ.কম : আবহাওয়ার পূর্বাভাস
জানাচ্ছে, আমফানের তীব্রতা ফণি'র তুলনায় অনেকটাই বেশী ধ্বংসাত্মক। এই সাইক্লোনকে রোখা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু এমন
বিপর্যয়য়েও জীবনহানি যাতে না হয় তাই নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
এই ভয়াবহ দুর্যোগের
মোকাবিলার গুরুদায়িত্ব যাদের কাঁধে তার মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ সেনানায়ক হলেন মন্ত্রী
শুভেন্দু অধিকারী। কিভাবে সমূদ্র ও নদীবাঁধ রক্ষা করা যাবে, কিভাবেই বা আমফান
পরবর্তী পরিস্থিতির আপৎকালীন মোকাবিলা করা হবে তাঁরই ব্লুপ্রিন্ট তৈরির কাজে
ব্যস্ত শুভেন্দুবাবু।
এই ব্যস্ততার মাঝেই
মঙ্গলবার রাতের দিকে দিঘায় ছুটে এসেছেন শুভেন্দুবাবু। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর
নির্দেশে জলসম্পদ ভবনে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এরই পাশাপাশি কাকদ্বীপ দিঘা এবং
বসিরহাটেও কন্ট্রোল রুম তৈরি রয়েছে।
ঝড়ের তান্ডব শুরু হওয়ার
সাথে সাথেই যাতে মেরামতিতে ঝাঁপানো যায় তারজন্য প্রশাসন সহ জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে
তৈরি রয়েছেন শুভেন্দুবাবু। এই জেলার উদয়পুর থেকে নয়াচর পর্যন্ত টিম তৈরি করে
নজরদারী চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন,
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আমফানের জেরে দিঘায় সমূদ্রের জল ফুলে উঠতে পারে ৩ থেকে
৪ মিটার। সুন্দরবন এলাকায় সেই উচ্চতা ছুঁয়ে ফেলতে পারে ৪ থেকে ৬ মিটার, যা অত্যন্ত
বিপজ্জনক বলেই মনে করছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
তাঁর মতে, সুন্দরবন
এলাকায় সমূদ্র বাঁধের সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫.৮মিটার। তাই আমফানের জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির
আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে সমূদ্র তীরবর্তী এলাকার ১০ কিমি জায়গা
জুড়ে থাকা সমস্ত কাঁচা ও বিপজ্জনক বাড়ি থেকে মানুষকে সরিয়ে ফেলা নিশ্চিত করেছে
রাজ্য সরকার।
এছাড়াও মৎস্যজীবিরা যাতে
এই সময় সমূদ্রে না যান তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই রাজ্যের দিঘা সহ দুই ২৪
পরগনা জেলা সহ একাধিক এলাকায় মোতায়েন হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তিনি জানান, এনডিআরএফ,
সিভিল ডিভেন্স-এড় ২০০'রও বেশী ভলেন্টিয়ার দিঘা, মন্দারমনি, জুনপুট কোস্টাল এলাকায়
মোতায়েন রয়েছে।
এরই পাশাপাশি
কোস্টগার্ডের তরফেও ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলাস্তরে কথা বলে কোস্টগার্ডের
সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। নন্দীগ্রাম, নয়াচর, কন্টাই কোস্টাল এলাকা সর্বত্র সতর্ক নজর
রাখছে কোস্টগার্ড।
এছাড়াও জেলা শাসকের তরফে
৫০ হাজারের বেশী মানুষ ৪ থেকে ৫ মিটার জলোচ্ছ্বাসের এলাকা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
তিনি জানান, একসঙ্গে সবাই মিলে কাজ করছে, তারজন্য যা যা করার করছে। শুভেন্দুবাবুর
মতে, সমূদ্রে এখন ব্যাপক গর্জন করছে। আগামীকাল জোয়ারের আগে দিঘার ওপর থেকেই বয়ে
যাবে এই ঝড়। তারজন্য সব রকম ভাবে তৈরি প্রশাসন।
তাঁর মতে, ঝড়ে গাছ পড়বে,
ইলেকট্রিক খুঁটি পড়বে। সেগুলি তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাছ কাটার, সার্চ লাইট, গ্যাস
কাটার রেডি রাখা হয়েছে। আগামীকাল সন্ধ্যে থেকে এগুলো দরকার হবে। প্রতিনিধিদের নিয়ে
আমি নিজেও তৈরি আছি।
ইরিগেশান থেকে ব্যাপক
বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কাকদ্বীপে চিফ ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে। পাথরপ্রতিমায় আধিকারীক
রয়েছেন। সাগর, পাথরপ্রতিমা, বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ ওদিকে উত্তর ২৪ পরগনার
হিঞ্জলগঞ্জ, সন্দেশখালি। এদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের যে সমস্ত বিপজ্জনক জায়গা আছে
সেখানে কয়েকলক্ষ পলিব্যাগের বস্তা তৈরি রাখা হয়েছে। ব্ল্যাক স্টোন রাখা হয়েছে বাঁধ
মেরামতির জন্য।
No comments